ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে সাজিদ হত্যাকান্ডে গ্রেফতার ০২ জন
মফিদুল ইসলাম লাভলু ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
৩১ মার্চ, ২০২২, 10:04 AM
মফিদুল ইসলাম লাভলু ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
৩১ মার্চ, ২০২২, 10:04 AM
ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে সাজিদ হত্যাকান্ডে গ্রেফতার ০২ জন
ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাহফুজুর রহমান সাজিদ নামক যুবককে গলাকেটে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের মোঃ হান্নান ও নান্দাইলের মোঃ আরমান। তারা হত্যাকান্ডের কারণসহ বর্ণনা দিয়ে স্বিকারোক্তি প্রদান করেছে। ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি বুধবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, নান্দাইলের রহিমপুর (জাহাঙ্গীরপুর) গ্রামের মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে মাহফুজুর রহমান সাজিদকে (১৫) তার নিজ বসতঘরে গত ২৬ মার্চ রাতে কে বা কারা ছুরিকাঘাতশেষে গলাকেটে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে নিহত সাজিদের মা ইসমিন আক্তার নান্দাইল
থানায় মামলা নং-৩১, তারিখ-২৮ মার্চ ২০২২ ইং দায়ের করেন। ক্লুলেস, লোমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের রহস্য দ্রুততম সময়ে উদঘাটন এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেন। তিনি আরোও বলেন, আসামি হান্নান ও আরমান পরস্পর আত্নীয়। হান্নান গাজীপুরের ভবানীপুরে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করত। হান্নান ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে সংসার চালাতে না পেরে তার তিন সন্তানের জননী স্ত্রী রুনা বেগমকে গার্মেন্ট শ্রমিক হিসেবে চাকুরী পাইয়ে দেয়। এদিকে হত্যাকান্ডে শিকার নিহত সাজিদের বড় ভাই রবিউল আওয়াল শুভ (১৮) হান্নানের স্ত্রীর সাথে গার্মেন্টে কাজ করার সুবাধে ভবানীপুর এলাকায় বসবাস করতেন। এক পর্যায়ে রবিউল আওয়াল শুভ ও হান্নানের স্ত্রী রুনা বেগমের সাথে অবৈধ সর্ম্পক গড়ে উঠে। রুনা বেগম প্রায় ৪/৫ মাস আগে প্রেমের টানে দুই সন্তানকে স্বামীর ঘরে ফেলে রবিউল আওয়াল শুভ এর সাথে পালিয়ে যায় এবং বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করে। স্ত্রী ও সংসার হারা হান্নান দিশেহারা হয়ে গাজীপুর এলাকা ছেড়ে সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর এলাকায় বসবাস শুরু করে। হান্নানের ২০ বছরের সংসার জীবন লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ায় প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে থাকে। খুনের পরিকল্পনা করে হান্নান। রবিউল আওয়াল শুভ কিংবা তার পরিবারে অন্য কাউকে হত্যার মধ্যদিয়ে প্রতিশোধ নিবে। এ লক্ষে গত ২৬ মার্চ হান্নান তার মামাতো ভাই আসামি আরমানের সাথে যোগাযোগ করে বাড়ীতে আসে। ঐ রাতেই পরিকল্পনা মোতাবেক হান্নান ও আরমান হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্যে ধারালো ছোরা নিয়ে মাহফুজুর রহমান সাজিদের ঘরে ডুকে। সাজিদকে একা পেয়ে হান্নান ও আরমান তাদের সাথে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে ও গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। তাদেরকে বুধবার আদালতে পাঠনো হলে তারা হত্যার কারণ ও বিবরণ তুলে ধরে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে বলে ডিবির সেকেন্ড অফিসার আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন। ডিবির ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, এটি একটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকান্ড ছিল। পুলিশ সুপারের পরিকল্পনামতে, টিম ওয়ার্ক কাজ করে অতি অল্প সময়ে রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও তদন্ত চলমান রয়েছে।