ভুয়া কাবিন নামা দেখিয়ে প্রবাসী পরিবারের কাছে তিন লক্ষ টাকা দাবীর অভিযোগ উঠেছে
১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, 1:18 AM
১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, 1:18 AM
ভুয়া কাবিন নামা দেখিয়ে প্রবাসী পরিবারের কাছে তিন লক্ষ টাকা দাবীর অভিযোগ উঠেছে
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারাং ইউনিয়নের পুরানগাঁওয়ে স্বামী পরিত্যক্তা পেয়ারা বেগম (৪০) ভুয়া কাবিন নামা দেখিয়ে মালয়েশিয়া প্রবাসী সিদ্দিক আলী (৩৫)এর পরিবারের কাছে কাবিন নামার দেনমোহরের নগদ তিন লক্ষ টাকা দাবীর অভিযোগ উঠেছে। পেয়ারা বেগম গৌরারাং ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের সামছুননুর মিয়ার মেয়ে। প্রবাসী সিদ্দিক আলী (প্রতিবন্ধী) একই গ্রামের মরহুম আব্দুল মজিদের ছেলে। এ ঘটনায় গত ১৩ (ডিসেম্বর) সোমবার প্রবাসীর ভাই মো.মাহমুদুল হাসান পেয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে জিডি এন্ট্রি করেছেন। সদর মডেল থানার ডায়রী নং-৬৫১,তারিখ ১৩/১২/২১ইং। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ (ডিসেম্বর) বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় পেয়ারা বেগম গ্রামের লোকজনের কাছে প্রচার করে প্রবাসী সিদ্দিক আলী গত ২০/০৫/১৬ইং তারিখে নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা মো.আব্দুল রাজ্জাক মুসলিম শরীহ তালাক রেজিস্ট্রার কাজী বিশা, ইউপি-আত্রাই নওগা,মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তিন লক্ষ টাকা মোহর কায়েম রেখে তাকে বিয়ে করেছে। বিয়ের পাচঁ বছর পর সিদ্দিক আলী দেশে না ফেরায় পেয়ারা বেগম প্রবাসীর পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাকে সম্মানের সহিত ঘরে তুলে না নিলে দেনমোহরের নগদ তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে। নইলে সিদ্দিক আলীর পরিবারের সবাইকে জেলের ভাত খাওয়াবে হবে হুমকি দেয়। প্রবাসী সিদ্দিক আলী বলেন, আমি দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ মালয়েশিয়ায় থাকি। বিদেশে থেকে কিভাবে আমি কাবিন নামায় স্বাক্ষর এবং বিয়ে করলাম। আমার গ্রামেই পেয়ারা বেগমের বাড়ি। নিকাহ রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে পেয়ায়া বেগমের পর পর ৩টি বিবাহ হয়। প্রথম বিয়ের পর প্রায় এক বছর সংসার করার পর স্বামী কর্তৃক পেয়ারা বেগমকে ডিভোর্স দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বিয়ে হয় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বাউগ ঘা গ্রামের আশরাফ মিয়ার সাথে। আশরাফ মিয়া রাতের বেলায় নকল সোনা বিক্রি করত। প্রতারণার মাধ্যমে পিতলকে সোনা বলে বিক্রি করার সময় বেড়াজালি গ্রামের লোকজন গণপিঠুনি দিয়ে আশরাফ মিয়াকে মেরে ফেলার পর। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের জলিলপুর গ্রামের হুন্ডি ব্যবসায়ি নুরুল আমীনের সাথে তৃতীয় বিয়ে হয়। নুরুল আমিন ৬ মাসের এক কন্যা সন্তান রেখে ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর। বর্তমানে আমাকে ফাসানোর চেষ্টা করছে তিন লক্ষ টাকার জন্য। পেয়ারা বেগম বলেন, পাঁচ বছর হয় সিদ্দিক আলীর সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। এখন পর্যন্ত সে দেশে আসেনি। আমাকে ঘরে তুলে নেওয়ার জন্য তার পরিবারকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তার পরিবার কাবিন নামা দেখে নকল বলে আমাকে ঘরে তুলে নেয়নি। আমি আইনের সরনাপন্ন হব। বিয়ের স্বাক্ষী মো.জহুরুল ইসলাম বলেন, পেয়ারা বেগম ভুয়া কাবিন নামায় আমাকে বিয়ের স্বাক্ষী বানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সে কাউকে দিয়ে স্বাক্ষীর কলামে আমার নাম লিখিয়েছেন। এই প্রতারক মহিলার বিরোদ্ধে আমি আইনি ব্যবস্থা নেব। স্থানীয় ইউপি-সদস্য ফয়জুর মিয়া বলেন, পেয়ারা বেগম আমার নিকট এসে কাবিন নামা দেখিয়ে বলেন সিদ্দিক আলী তিন লক্ষ টাকা মোহর দিয়ে তাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ে করেছে। পরে আমি সিদ্দিক আলীর পরিবারের সাথে কথা বলে পেয়ারা বেগমকে এক লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেই। আমার প্রস্তাবে পেয়ারা বেগম রাজি হয়ে কাগজ পত্র টিকটাক করার জন্য বলেন। পরবতীতে পেয়ারা বেগম তিন লক্ষ টাকার লোভে পরে আপোষ করতে রাজি হয়নি। শালিশী ব্যক্তিত্ব আব্দুল হাই বলেন, পেয়ারা বেগম কাবিন নামা নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। পরে সিদ্দিক আলীর পরিবারের সাথে কথা বলে পেয়ারা বেগমকে নিয়ে বসেছিলাম। সিদ্দিক আলীর পরিবার বিষয়টি শেষ করার জন্য এক লক্ষ টাকা দিতে রাজি হলে পেয়ারা বেগম তিন লক্ষ টাকা দাবী করে। এই মহিলা অনেক লোকের সাথে এরকম ঘটনা করেছে।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. শহিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় জিডি এন্ট্রি করা হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।