ঢাকা ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
শিল্প খাতে এআই-এর প্রসার বাড়াতে গ্লোবাল অ্যালায়েন্সে যোগ দিল ক্যাসপারস্কি বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনের নির্বাচন নিয়ে ছলচতুরি যাত্রীদের প্রতাশা পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা বসুন্ধরা ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে প্রশিক্ষণ, সনদ পেলেন ৪০ জন বড়দিনের আনন্দে সম্প্রীতির জয়গান বড়দিনের আনন্দে সম্প্রীতির জয়গান সিএফমোটো বাংলাদেশে অফিসিয়ালি লঞ্চ করল তাদের ফ্ল্যাগশিপ ৩০০ সিসি’র স্পোর্টস বাইক সিএফমোটো বাংলাদেশে অফিসিয়ালি লঞ্চ করল তাদের ফ্ল্যাগশিপ ৩০০ সিসি’র স্পোর্টস বাইক সিএফমোটো বাংলাদেশে অফিসিয়ালি লঞ্চ করল তাদের ফ্ল্যাগশিপ ৩০০ সিসি’র স্পোর্টস বাইক ভাইব্রেন্ট এখন উত্তরায়

জগন্নাথপুরে উৎকোচের বিনিময়ে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন: নিরীহ মানুষদের হয়রানী

#

১৬ আগস্ট, ২০২২,  10:44 AM

news image

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে উৎকোচের বিনিময়ে আদালতে সাজানো মিথ্যা মামলার প্রতিবেদন দাখিল করার খবর পাওয়া গেছে। খোজ নিয়ে জানা যায়- উপজেলার কল কলিয়া ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের মৃত আইউব উল্লার ছেলে চিহ্নিত চাঁদাবাজ সাজ্জাদ মিয়া ও তার গডফাদার সিরাজ মিয়া এলাকায়  সিরাজ বাহিনী নামে এলাকায় গড়ে তুলেছে বিশাল অপরাধ চক্র, সেই চক্রের মাধ্যমে এলাকায় কায়েম করেছে ত্রাসের রাজত্ব- তাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে এলাকার ধর্ণাঢ্য প্রবাসীরা। যাদের প্রেরিত রেমিট্যান্সে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। 


প্রতিনিয়ত সেই সব প্রবাসীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা আদায় করে এই চক্র। চাঁদা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও জমিদখল করার একাধিক অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ। 


জানা যায় মজিদপুর গ্রামের কৃতি সন্তান যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল বারী ও  আব্দুর রশিদ মিয়া- প্রবাসে থাকার সুবাদে তাদের ক্রয়কৃত জমিতে বাঁশঝাড় রোপণ করে সেই জমিকে নিজের বলে দাবি করে এই চক্রের প্রধান সিরাজ মিয়া ও তার বাহিনী । এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিচার পঞ্চায়েত ও সালিসী বৈঠক চলে আসছিলো। পরে জগন্নাথপুর থানার  অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমানের মধ্যস্থতায় বিষয়টির নিস্পত্তি হয়। 


কিন্তু নিস্পত্তি হওয়া সেই বিষয়টি নিজেদের অনূকূলে না হওয়ায় সিরাজ বাহিনী ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়- এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ইং তারিখে নিজ পরিবারের লোকদের স্বাক্ষী রেখে- 


প্রবাসী আব্দুল বারী ও  আব্দুর রশিদ মিয়া পরিবারের সদস্য- মঞ্জিল মিয়া, নাসির মিয়া, উমর আলী, নেছার মিয়াকে আসামি করে মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে- গডফাদার সিরাজ মিয়ার কুপরামর্শে সুনামগঞ্জ আদালতে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করে সাজ্জাদ মিয়া। 


সরেজমিনে গিয়ে এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছামির আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান৷ গত ৫-৬ মাসের মধ্যে এই এলাকায় ছিনতাই হামলা, লুটপাটের ঘটনার কোনো খবর আমি শুনিনি।


মজিদপুর পয়েন্টের বিভিন্ন দোকান মালিকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা জানান,  এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে এমন খবর শুনিনি! তবে মামলা হয়েছে শুনেছি।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন সাধারণ মানুষ জানান- গত এক বছরের মধ্যে এরকম কোনো ঘটনা এই এলাকায় ঘটেনি।


স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ছাদিক মিয়া বলেন- গত বছরের ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনে আমি নির্বাচিত হই। কিন্তু আমার নির্বাচনী এলাকায় এপর্যন্ত কোনো ধরনের ছিনতাই, লুটপাট হামলা হয়েছে বলে আমার জানা নাই।


মামলায় উল্লেখিত ঘটনাস্থলের পাশের মাহমদ হাজী মক্তব (পাঞ্জেগানা মসজিদের) ইমাম হাফিজ হারুনুর রশিদ বলেন- গত একবছর যাবত এই মসজিদে ইমামতি করছি- ছিনতাই হামলা, লুটপাটের কোনো ঘটনা আশে পাশে  ঘটেনি। কোনো পুলিশ কর্মকর্তাও এখানে এসে তদন্ত করেননি।


কলকলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


গ্রামের হিরন মিয়া, ছোট মিয়া, ছাদ আলী, সিরাজ আলী নামে আরো কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়,  সাজ্জাদ মিয়া ও সিরাজ মিয়া খুব খারাপ প্রকৃতির লোক! গ্রামে হামলা মামলা লুটপাট করে নিরিহ মানুষদের হয়রাণী ও প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করাই তাদের প্রধান কাজ। তারা আরো জানান জগন্নাথপুর উপজেলার সাবেক এসিলেন্ড ভুমি জালিয়াতির অভিযোগে তাদের ১৫ দিনের জেল জরিমানা করেন। কেউ কেউ তাকে ভুমিখেকো সিরাজ নামে উল্লেখ করে থাকেন।


এদিকে জগন্নাথপুর থানার সাবেক এস আই মোঃ আব্দুস ছাত্তার- সাজ্জাদ মিয়া ও তার গডফাদার সিরাজ মিয়ার কাছ থেকে উৎকোচের বিনিময়ে কোনো প্রকার তদন্ত না করেই- মঞ্জিল মিয়া, নাসির মিয়া, উমর আলী, নেছার মিয়ার নামে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।  বিবাদী মঞ্জিল মিয়া বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। আবার মিথ্যা এই মামলায় ভয় দেখিয়ে প্রবাসী আব্দুল বারী ও আব্দুর রশিদ মিয়ার কাছ থেকে এস আই আব্দুস ছাত্তার মোটা অঙ্কের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি জানান। 


এব্যাপারে মুঠোফোনে এস আই আব্দুস ছাত্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- মামলার ধারা তেমন গুরুতর নয়। চিন্তার কিছু নাই! এতে বিবাদীদের কোনো সমস্যা হবেনা। আদালতে দুই তিন তারিখ হাজিরা দিলেই মামলা ডিসমিস হয়ে যাবে।


তিনি আরো বলেন, আগে জানা ছিলোনা এক সাংবাদিকের ভাইয়ের নাম এখানে রয়েছে! জানলে তার নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হতোনা। 

তার এমন মন্তব্যে সাংবাদিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

এব্যাপারে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর থানা ওসি মিজানুর রহমান বলেন- বিষয়টি দুঃখজনক, আমার থানার সকল এস আই সহ পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি কোনো নিরীহ মানুষ যেনো হয়রানীর শিকার না হয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : তানভীর সানি