গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য হত্যায় অভিযুক্ত আরিফের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি
১৬ নভেম্বর, ২০২১, 3:18 PM
১৬ নভেম্বর, ২০২১, 3:18 PM
গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য হত্যায় অভিযুক্ত আরিফের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি
গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য স্কুল শিক্ষক আবদুর রউফকে হত্যার ঘটনার প্রধান আসামি র্যাবের হাতে গ্রেফতার আরিফ মিয়াকে রোববার সন্ধ্যায় সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত আরিফ মিয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদার রহমান জানান, ঘাতক আরিফ মিয়া পুলিশের কাছে হত্যার সাথে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পারিবারিক শত্রুতার কারণে তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে এই হত্যাকা- চালান। ইউপি নির্বাচনে আবদুর রউফ দ্বিতীয়বার সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় আরিফের ভেতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আবদুর রউফ যাতে আর দায়িত্ব পালন করার সুযোগ না পায় সেজন্য আরিফ পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকা- ঘটায়। পরে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) জাহাঙ্গীর আলম সোমবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে অভিযুক্ত আরিফ মিয়াকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ১৬৪ ধারায় (জবানবন্দির) জন্য আদালতে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করছেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জবানবন্দি দেয়া অব্যাহত ছিল।উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্যপদে নির্বাচিত হন আবদুর রউফ। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিবেশী রুহুল আমিনের মোটরসাইকেলে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। তাঁরা একই ইউনিয়নের বামুনিরপাড়া এলাকায় একটি বিধ্বস্ত সেতু পায়ে হেঁটে পার হচ্ছিলেন। রুহুল আমিন মোটরসাইকেল হাতে সামনে এবং আবদুর রউফ তাঁর পেছনে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মাগুড়াকুটি গ্রামের আরিফ পেছন থেকে রউফের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। একপর্যায়ে আরিফ লোহার রড দিয়ে পেছন থেকে রউফকে আঘাত করতে থাকেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে আরিফ পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় রউফকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। নিহত আবদুর রউফ লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মাগুড়াকুটি গ্রামের মৃত ফজলু হকের ছেলে। তিনি লক্ষ্মীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।এই ঘটনায় গত শনিবার সন্ধ্যায় নিহত আবদুর রউফের বড় বোন মমতাজ বেগম বাদি হয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় ১৪৩, ৩৪১, ৩২৩, ৩০২, ৫০৬, ৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা (নং ২৩) দায়ের করেন। মামলায় আরিফ মিয়ার নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৬/৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর আরিফ মিয়া পলাতক ছিল। পরে র্যাব সদস্যরা গোপন সুত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আরিফ মিয়াকে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পাঁচপীর গ্রাম থেকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করে।