ঢাকা ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
বসুন্ধরা ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে প্রশিক্ষণ, সনদ পেলেন ৪০ জন বড়দিনের আনন্দে সম্প্রীতির জয়গান বড়দিনের আনন্দে সম্প্রীতির জয়গান সিএফমোটো বাংলাদেশে অফিসিয়ালি লঞ্চ করল তাদের ফ্ল্যাগশিপ ৩০০ সিসি’র স্পোর্টস বাইক সিএফমোটো বাংলাদেশে অফিসিয়ালি লঞ্চ করল তাদের ফ্ল্যাগশিপ ৩০০ সিসি’র স্পোর্টস বাইক সিএফমোটো বাংলাদেশে অফিসিয়ালি লঞ্চ করল তাদের ফ্ল্যাগশিপ ৩০০ সিসি’র স্পোর্টস বাইক ভাইব্রেন্ট এখন উত্তরায় ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং খাতে চ্যালেঞ্জ ও সমাধান – বাফা প্রেসিডেন্ট প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মালিক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সকম গ্রুপের ৩০ হাজার কোটি টাকা একার দখলে নিয়েছেন সিমিন রহমান বিসিকে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা

"পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ"

#

০১ সেপ্টেম্বর, ২০২২,  12:02 PM

news image

রাজশাহীতে পুলিশের এক কর্মকর্তা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে টিনশেডের একটি বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে অবৈধভাবে জমি দখল করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার দুইজন ভুক্তভোগী প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ অভিযোগের অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার এবং রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় দিয়েছেন তারা।


অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম মাহাবুবুর রহমান। তিনি পুলিশের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি। বর্তমানে টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত।

রাজশাহী মহানগরীর বড়বনগ্রাম মৌজায় খতিয়ান নম্বর-১২১৫, জেএল নম্বর-৮২ ও দাগ নম্বর-৩১৬১ এর তিন কাঠা জমি নিয়ে সাতজন ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বিরোধ।


এই সাতজনের পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী কোহিনূর ইয়াসমিনও জমিটির মালিকানা দাবি করছেন। জমির মূল মালিক দুজনের কাছে একই জমি বিক্রি করার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জমিটির মালিক হিসেবে প্রথম ক্রেতার ওয়ারিশ হিসেবে সাতজনের পক্ষে রায় দিয়েছেন।


প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগে বলা হয়, জমিটির মূল মালিক ছিলেন সেরাজ উদ্দিন শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি তার ২১ কাঠা জমি থেকে তিন কাঠা ১৯৯৯ সালে প্রথমে বিভা রহমান নামের এক নারীর কাছে বিক্রি করেন। এর একমাস পরেই সেরাজ উদ্দিন বিক্রি করা তিন কাঠাসহ মোট ২১ কাঠা জমিই তাঁর চার ছেলের নামে সমানভাবে বণ্টন করে হেবা দলিল করে দেন।


চার ছেলের মধ্যে সাইদুল ইসলাম নামের এক ছেলের ভাগে পড়ে বিভা রহমানের কেনা তিন কাঠা জমি। পরবর্তীতে সাইদুল ইসলাম বুঝতে পারেন যে, এই জমি তাঁর বাবা আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই কৌশলে বাবার দেওয়া হেবা দলিলের বলে ২০১১ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমানের স্ত্রী কোহিনূর ইয়াসমিনের কাছে বিক্রি করেন।


জমিটি ফাঁকা পড়ে ছিল বলে বিভা রহমানও কেনার পর আর কোন খোঁজ নেননি। ২০১৬ সালের দিকে বিভা রহমান জমিটি খারিজ করার সময় বোয়ালিয়া ভূমি অফিসে গিয়ে দেখতে পান, তিনি যার কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন সেই সেরাজুল ইসলাম জমি বিক্রির পরও একই জমি ছেলেকে দিয়েছেন এবং সেই ছেলেও আরেকজনের কাছে বিক্রি করেছেন। এসব দলিল বাতিলে তিনি বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসে মামলা করেন। কিন্তু কিছুদিন পরই বিভা রহমান মারা যান।


এরপর এই জমির ওয়ারিশ হন বিভার স্বামী কোরবান আলী এবং তিন ভাই নজরুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম ও আবদুস সামাদ। এদের মধ্যে বিভা রহমানের স্বামী কোরবান আলীও পরে মারা গেলে জমির তার অংশটুকুর ওয়ারিশ হন চার ভাই বজলার রহমান, নজরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও মোজাহারুল ইসলাম। এখন এই সাতজন জমির মালিক। ওয়ারিশেরা ভূমি অফিসে মামলা পরিচালনা করেন। ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন থানা ভূমি অফিসের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবুল হায়াত।


রায়ে বলা হয়েছে, জমির মালিকানা পাবেন প্রথম ক্রেতা বিভা রহমানের ওয়ারিশরাই। আর কোহিনূর ইসলাম ক্ষতিপূরণ পাবেন সাইদুল ইসলামের কাছে। বিভা রহমানের ওয়ারিশরা জমির মালিকানা পেলেও এখন কোহিনূর ইসলামের পক্ষে তার স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।


অভিযোগপত্রে বলা হয়, রায় পাওয়ার পর ওয়ারিশরা সীমানা প্রাচীর ও একটি গেট দেন। কিন্তু গত ২৬ জুন পুলিশ কর্মকর্তার লোকজন সেই গেট ভেঙে দেন। গুড়িয়ে দেন সীমানা প্রাচীরও। ওই দিন তারা এ বিষয়ে অভিযোগ করতে শাহমখদুম থানায় যান। কিন্তু থানার ওসি মেহেদী হাসান জানিয়ে দেন, অতিরিক্ত ডিআইজির বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ নিতে পারবেন না।


এরমধ্যে সম্প্রতি বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দেন পুলিশ কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান। গত ২৭ জুলাই এ ব্যাপারে শুনানি হয়। এতে দুইপক্ষই অংশ নেয়। সেদিন শুনানির জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর পরবর্তী তারিখ দেন ভূমি কর্মকর্তা।


কিন্তু ওই শুনানির আগেই সেদিন মাহাবুবুর রহমান ভূমি অফিস থেকে বেরিয়েই সোজা চলে যান ওই জমিতে। সেখানে আগে থেকেই ছিল তার লোকজন। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সামাদ-বজলারদের টিনশেড বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন।


এ ব্যাপারে থানা পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও তা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগীরা। বাধ্য হয়ে আইজিপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন আবদুস সালাম ও বজলার রহমান। এতে তারা উল্লেখ করেছেন, পুলিশ কর্মকর্তা তাদের মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের ভয় দেখাচ্ছেন।


হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অতিরিক্ত ডিআইজি মাহাবুবুর রহমান। তবে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেছেন।


মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘জমিটা তো আমিও কিনেছি। আমিও ভুক্তভোগী। প্রথম রায়টা হয়েছিল একপাক্ষিক। সে কারণে রিভিউ পিটিশন করছি। আগামী তারিখেই হয়তো ফয়সালা হয়ে যাবে। তার আগে কারও কোন স্থাপনা যেন না থাকে সে জন্য টিনশেডের ঘরটা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।’

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : তানভীর সানি